ভূমিকা
সাধারণভাবে একজন ব্যক্তির প্রেম ভালবাসা বিয়ের আগেই শুরু হতে পারে। আর সেটা যদি নাও হয় তাহলে বিয়ের পরে অবশ্যই জীবনসঙ্গীর সাথে প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু আজকের ঘটনার চরিত্রের বিয়ের আগে নয়, বিয়ের পরেও নয়, প্রেম ভালোবাসার শুরু হয় চারজন সন্তানের জন্মের পরে। আজকের ঘটনা 28 বছর বয়সের সীমা হায়দর নামের একজন পাকিস্তানি মহিলার যার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় শচীন নামক ২৩ বছরের একজন ভারতীয ছেলের সাথে। কোথায় আছে প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসার কোন সীমা হয় না। দুজন ব্যক্তির ভালোবাসার মধ্যে কোন সীমা থাকতে না পারে। কিন্তু দুটি দেশের মধ্যে অবশ্যই নির্ধারিত সীমা আছে। এমনিতেও ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে প্রচন্ড তিক্ত সম্পর্ক। তার ওপর একটা প্রেমের সম্পর্ক এই দুটো দেশের নাগরিকের মধ্যে হওয়ার জন্য যা যা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে তার সবকিছুই এই ঘটনাতে হয়েছে।
কে এই সীমা হায়দার?
পাকিস্তানের সিন্ধু প্রান্তের জসিমাবাদ নামক একটি এলাকায় সীমা হায়দারের জন্ম হয় একটি অত্যন্ত সাধারণ পরিবারে। বাবা মা আর চার ভাই বোন নিয়েছিল সীমার পরিবার। ২০১৪ সালে গোলাম হাজির নামে একজন ব্যক্তির সাথে সীমার বিয়ে হয়। সিন্ধু প্রান্ত আর বালুচিস্তানের সীমানায় ছিল সীমার শশুর বাড়ি। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পর সীমার স্বামী সীমাকে নিয়ে করাচিতে গিয়ে বসবাস করে। টাইলস আর মার্বেলের ব্যবসার সাথে অটো ও চালাত সীমার স্বামী। সীমার বয়ানে তাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক ছিল না, মাকে প্রচণ্ড মারধর করা হতো। এইভাবে সীমা আর কলামের বিবাহিত জীবনের ছয় বছর কেটে যায়। এই ছয় বছরে সীমা চারটি সন্তানের মা হয়। সীমার হিসেবে 2019 সালে সীমার স্বামী সৌদি আরবে যাওয়ার পরে প্রায় তিন বছর তাদের মধ্যে কোনরকম সম্পর্ক ছিল না।
কিভাবে হল সীমা শচীনের প্রেম?
এর মধ্যে ২০২০ সালের মার্চ মাসের পরে কোভিড এর কারণে বাকি দেশগুলোর মত পাকিস্তানেও মারাত্মক প্রভাব পড়ে। কোভিডে লকডাউনের সময় ঘরে বন্দী অবস্থায় সময় কাটানোর জন্য সীমা অনলাইন পাবজি গেম খেলতে শুরু করে। এই গেম খেলতে গিয়ে ২০২১ সালে অনলাইনে সীমার সাথে শচীন নামক একজন ভারতীয় ছেলের যোগাযোগ হয়। ২৩ বছর বয়সে শচীনের বসবাস দিল্লীর গ্রেটার নয়দা এলাকাতে। একটি সাধারণ পরিবারের ছেলে সচিন, তার একটি মুদিখানার দোকান আছে। Pubg খেলতে গিয়ে সীমা সচিনের আলাপ হয় এবং তাদের মধ্যে নাম্বার আদান-প্রদান হয়। কথা বলতে বলতে দুজনের মধ্যে একটা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং সময়ের সাথে সাথে সেই প্রেমের সম্পর্ক আরো গভীর হতে থাকে। ২৮ বছরের সীমার সাথে ২৩ বছরের শচীনের বয়সের ব্যবধান ৫ বছর। চারজন সন্তানের মা হলো সীমা। এছাড়াও তারা দুজন এমন দুটি দেশের নাগরিক ছিল যে দুটো দেশের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ততায় ভরা। এই এত বাধা দুজনের প্রেমের সম্পর্কে কোন সমস্যার সৃষ্টি করতে পারেনি। প্রেমের সম্পর্ক যত কারো হতে থাকে দুজনের মধ্যে দেখা করার ইচ্ছেটাও ততটা প্রবল হতে থাকে। তখন তারা দেখা করার পরিকল্পনা করতে থাকে।
সীমা শচীনের প্রথম সাক্ষাৎ কিভাবে হলো?
কোভিড এর কারণে দীর্ঘদিন বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। বিমান চলাচল যদিও বা স্বাভাবিক হলো কিন্তু ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততার জন্য সীমা শচীন কেউই ভিসা পেল না। কিন্তু তারা সাক্ষাৎ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। সম্পর্ক তৈরির দু’বছর পরে সীমা শচীন সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা এ বছরের মানে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে কাঠমান্ডুতে দেখা করবে। ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশ থেকেই নেপালে পৌঁছানোটা খুবই সহজ ছিল। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ নির্ধারিত দিনে দুজনের প্রথমবার নেপালের কাঠমান্ডুতে দেখা হয়। এরপর একটা হোটেলে দুজন এক সপ্তাহ একসাথে থাকে। এই সময়ে তাদের সম্পর্ক আরো গভীর হয় কিন্তু মাত্র একটা সপ্তাহ খুবই দ্রুত কেটে যায়। তারপর সীমা সচিন যার যার নিজের দেশে ফিরে যায়, তার আগে তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা দুজন বিয়ে করে বাকি জীবনটা একসাথে কাটাবে।
সীমা হায়দর ভারতে কিভাবে আসে?
পাকিস্তানে পৌঁছে সীমা একটা ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে নিজের চারজন সন্তানের সাথে ভারতে চলে আসার পরিকল্পনা করতে থাকে। ট্রাভেল এজেন্ট পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেয় যে চারজন বাচ্চার পাসপোর্ট তৈরি হয়ে যাবে কিন্তু ভারতের ভিসা পাওয়া যাবে না। ভারত আর পাকিস্তানের সম্পর্কের তিক্ততা আরো বেড়েছে তাছাড়া ভারতের সীমার কোন আত্মীয় পরিজনও নেই সে কারণে কোনোভাবেই ভিসা পাওয়া সম্ভব নয়।
সীমার কাছে ভারতে পৌঁছানোটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটা বৈধভাবে হোক বা অবৈধভাবে। তারপর ঠিক হয় পাকিস্তান থেকে নেপাল আর নেপাল থেকে সড়কপথে সীমা মে মাসের প্রথম সপ্তাহে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করবে। পরিকল্পনা মত সীমা চার জন সন্তানের সাথে পাকিস্তানের করাচি থেকে নেপালের কাঠমান্ডুতে পৌঁছয়, সেখান থেকে বাসে করে পোখরা হয়ে সড়কপথে ভারতে আসে। শচীন আগে থেকেই গ্রেটার নয়ডা বাস স্টপে সীমার জন্য অপেক্ষা করছিল। শচীন, সীমা আর তার সন্তানদের নিজের স্ত্রী সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়ে একটি ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ওঠে। প্রায় মাস খানেক একসাথে বসবাস করার পরে শচীনতার বাবা মাকে সমস্ত ব্যাপারটা জানায়। প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছেলের খুশির জন্য সমস্ত ব্যাপারটা মেনে নিয়ে শচীনের বাবা আইসম্মত ভাবে বিয়ে করার পরামর্শ দেয়।
সীমা হায়দর আর শচীনের বিষয়টা পুলিশের কাছে কিভাবে পৌঁছালো?
শচীন তার বাবার পরামর্শ মেনে নিয়ে সীমাকে আইনিভাবে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে কারণে তারা একজন উকিলের কাছে যায় এবং সমস্ত বিষয়টা তাকে জানায়। ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে পাকিস্তানি সীমার ভারতে প্রবেশ করার পুরো ঘটনাটা উকিল সবিস্তারে লোকাল থানায় জানিয়ে দেয়। বিষয়টা জেনে সঙ্গে সঙ্গে সক্রিয় হয়, তারপর সীমা সজিন এবং শচীনের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। সীমা পুলিশকে জানাই যে পাকিস্তানি সিন্দুরপ্রদেশে তার বাস। ২০১৪ সালে গোলাম হায়দারের সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। সে চার জন সন্তানের মা সেই সাথে তার বিয়ের সমস্ত ডকুমেন্ট, ভিডিও, সার্টিফিকেট সব পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সে আরো জানায় তার ভাই এবং এক দূর সম্পর্কের কাকা পাকিস্তানি আর্মিতে আছে। ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে চারজন সন্তানকে নিয়ে এত ঝুঁকি নিয়ে ভারতে প্রবেশ করার কারণ শুধুমাত্র শচীনের প্রতি ভালোবাসা এটাও সে পুলিশকে জানায়। পুলিশের এর সীমার অনুরোধ যেন তাকে পাকিস্তানে আর ফেরত পাঠানো না হয়। তাকে যেন শচীনের থেকে আলাদা করে না দেওয়া হয়।
শচীনের ব্যাপারেও তদন্ত করে পুলিশ সন্দেহজনক কিছু পায়নি। এর আগে শচীন কখনো কোন অপরাধ করেনি।
এটিএস কেন সীমা হায়দর আর শচীনের কেসের তদন্ত করছে?
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ সীমাকে জেলে পাঠিয়ে দেয়। তিন দিন জেলে রাখার পরে সন্দেহজনক কিছু না পেয়ে সীমাকে জামিন দেওয়া হয়। তারপরের ধাপের তদন্ত করতে গিয়ে নয়টা পুলিশ অনেকগুলো সমস্যার সম্মুখীন হয়। পাকিস্তানের করাচি থেকে, দুবাইয়ের শারজা থেকে, নেপালের কাঠমান্ডু হয়ে ভারতের নয়ডার যোগাযোগ এই সীমা হায়দারের কেসে। দেশের থেকে বেশি তদন্তের প্রয়োজন বিদেশে, সে কারণে এই কেসের তদন্ত করা কার্যত নয়ডা পুলিশের ক্ষমতার বাইরে। এরপর সীমার ব্যাপারে সমস্ত তথ্য নয়ডা পুলিশ কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়ে দেয় আর লোখনৌর হেড কোয়ার্টারে একটা আবেদন এই মর্মে করে যে তদন্তভার এমন একটা এজেন্সি কে দেওয়া হোক যে বিনা বাধায় দেশে বিদেশে প্রয়োজন মত তদন্ত করতে পারবে। এমনিতেও পাকিস্তানি সীমার গুপ্তচর হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আবার যদি গুপ্তচর প্রমাণ হয় তাহলে আতঙ্কবাদি আক্রমণের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা সেই বিষয়ে তদন্ত ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এ টি স তদন্তভার নেওয়ার পরে সীমা, শচীন আর শচীনের বাবাকে প্রথমে একসাথে, তারপর আলাদা আলাদা ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এটিএস সীমা হায়দারের বিষয়ে কি কি তদন্ত করবে?
নয়ডা পুলিশ প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে সন্দেহজনক কিছু না পাওয়ার জন্য সীমা হায়দারকে জামিনে ছাড়া দেয় এই শর্তে যে বাড়ির বাইরে বেরোনো যাবে না।
এটিএস যে যে বিষয়ে তদন্ত করবে:-
এবছরের মার্চে নেপালের হোটেলে সীমা ও শচীন কি নামে ছিল?
নেপালে ওদের বিয়ের কি কোন সত্যতা আছে?
দুবাইয়ের শারজা থেকে ভারত আসার জন্য যে পাসপোর্ট ভিসা ইমিগ্রেশন লেগেছে তা তদন্ত করবে এ টি এস।
এছাড়াও পাকিস্তান থেকে ভারত আসার যে বিপুল খরচ সেটা কোথা থেকে এলো, সে বিষয়ে তদন্ত হবে। সীমার বয়ানে সে তার একটা বাড়ি বিক্রি করে পাকিস্তানি টাকায় প্রায় ১২ লাখ টাকা পেয়েছিল। সেই টাকা থেকে ভারত আসার সমস্ত খরচ সে করে। এ টি এস এর জন্য এখন এটাই তদন্তের বিষয় যে, সেই বাড়িটা পাকিস্তানের কোন এলাকায় ছিল।
সীমা জন্মস্থান বালুচ থেকে করাচিতে কিভাবে পৌঁছল, প্রথম বিয়ে গোলাম হায়দারের সাথে কিভাবে হল, এসব বিষয়ে তদন্ত। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সীমা জানিয়েছে তার ভাই পাকিস্তানি আর্মিতে আছে এছাড়াও সীমার পরিবারের আর কেউ পাকিস্তান আর্মি বা ইন্টেলিজেন্সে তে আছে কিনা সেই বিষয়ে তদন্ত। ২০২০ সালে সীমার সাথে শচীনের আলাপের পরে ওর মোবাইলের সমস্ত রকম ডিটেলসের ও তদন্তের প্রয়োজন। গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে সীমার কি আরো ছেলে বন্ধু হয়েছিল ভারতে বা পাকিস্তানে? যদি হয় তারা কারা?
সীমার চারজন বাচ্চার সত্যিটা কি?
ভালোবাসার টান সত্যিই কি এতটাই গভীর যে যার জন্য নিজের দেশ, নিজের লোকজন ছেড়ে চারটে বাচ্চাকে নিয়ে একটা অজানা দেশে ভিসা ছাড়া প্রবেশ করা যায় নাকি এখানে অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে সীমা হায়দারের।
সীমার প্রথম স্বামী গোলাম হায়দারের কি বক্তব্য এই ঘটনা নিয়ে?
সীমা হায়দারের প্রথম স্বামীর নাম গোলাম হায়দার। সিন্ধ প্রদেশের শেষ এবং বালুচিস্তানের শুরু যেখানে সেই এলাকায় মা, বাবা আর ভাই কে নিয়ে তার বসবাস। টাইলস আর মার্বেলের ব্যাবসার সাথে অটো ও চালাত। ওদের জাতির নিয়ম অনুসারে ২০০৫ অথবা ২০০৬ সালে ভীষণই কম বয়সে গোলাম হায়দারের বিয়ে হয়ে যায়। প্রথম স্ত্রীর সাথে সাত বছরের বিবাহিত জীবন আর দুই সন্তান একটি ছেলে ও একটি মেয়ে ছিল তার। ২০১৪ সালের শুরুতে একদিন গুলাম হায়দার ভুল করে একটি নম্বর এ কল করে, সেটি সীমা হায়দার এর। তারপর সীমা আবার গোলাম হায়দার কে ব্যাক কল করে। সেই থেকে তাদের মধ্যে কথাবার্তা শুরু হলো। এইভাবে প্রায় তিন মাস ওদের মধ্যে নিয়মিত দীর্ঘ সময় ধরে কথাবার্তা চলতে থাকে। হঠাৎ একদিন সীমা গোলামের সাথে দেখা করতে চাই। গোলাম ও সীমার সাথে দেখা করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। এরপর দুজন ঠিক করে সিন্দ্র প্রদেশে একটা দরগাতে ওরা দেখা করবে। ২০১৪ সালের শুরুতে দুজনে প্রথমবার একটা দরগাতে দেখা করে। প্রথম সাক্ষাতের পর দুজনের প্রেমের সম্পর্ক আরো গভীর হতে থাকে। ছয় সাত মাস পর সীমা গোলাম হায়দারকে বিয়ে করতে চায় কিন্তু এই শর্তে যে প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে হবে। গোলাম হায়দার রাজি হয়ে যায় এবং পঞ্চায়েতের সামনে তার প্রথম স্ত্রীকে তার প্রাপ্য মিটিয়ে দিয়ে ডিভোর্স নিয়ে নেয়। ২০১৪ সালে সীমা এবং গোলাম ভাইদের কোর্টে গিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের পর কিছুদিন গ্রামে থাকার পরে 2015 সালে ওরা করাচি চলে যায়। করাচিতেও গোলাম হায়দার মার্বেল টাইলসের কাজ শুরু করে তার সাথে অটো চালায়। ২০১৯ সালে সীমা তিন সন্তানের মা হয়ে গেছিল আর এক সন্তান তার গর্ভে ছিল। জীবনযাত্রার খরচের কথা চিন্তা করে সীমা গুলাম হায়দার কে সৌদি আরব যাওয়ার কথা বলে। ২০১৯ এ সীমার কথা মত গোলাম কাজের জন্য সৌদি আরব চলে যায়। সীমা যখন চতুর্থ কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় তখন গোলাম হায়দার সৌদি আরবে ছিল। ২০২০ শুরুতে কোভিডের কারণে হায়দারের পাকিস্তানে ফেরাও সম্ভব ছিল না। সীমা সঙ্গে থাকার জন্য করাচিতে তার বাবাকে ডেকে নেয়। ২০২২ সালে শেষের দিকে সীমার বাবার মৃত্যু ঘটে। এরপর চারজন সন্তানকে নিয়ে সীমা করাচিতে একা বসবাস করতে থাকে। এরমধ্যে গোলাম হায়দারাবাদে পাকিস্তানে ফেরেনি। কোভিডের সময় সীমা অনলাইন পাবজি গেম খেলতে শুরু করে যেখান থেকে শচীনের সাথে আলাপ প্রেম এবং সীমার অবৈধভাবে ভারতে চলে আসা। গোলাম হায়দার পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে সীমার পুরো পরিবারের সাথে সে পরিচিত এবং তারা পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে বসবাস করছে। অতএব সীমা কোনভাবেই ভারতীয় হতে পারে না বা নয়। সে আরো জানিয়েছে যে সীমা যদি এখনো তার কাছে ফেরত যায় সে তাকে আপন করে নিতে প্রস্তুত আছে কারন সে সীমাকে ভালোবাসে।
সীমা হায়দর এর কি ভবিষ্যৎ?
প্রথম দিকে এটিএস সীমা-শচীনকে গ্রেফতার করেনি। তাদেরকে শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। তদন্ত সম্পূর্ণ হলে জানা যাবে সীমার সাথে কি হবে। তাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে নাকি গ্রেফতার করা হবে। নির্দোষ প্রমাণ হলে শচীন সীমার বিয়ে কে মান্যতা দিয়ে তাকে এখানে থাকতে দেওয়া হবে, সেটার জন্য প্রয়োজনে লম্বা সময়ের ভিসাও দেওয়া যেতে পারে। এই সমস্ত কিছু নির্ভর করছে এ টি এ সের তদন্তের রিপোর্টের উপর।